Lighting The Way Islam

Select Language

Saturday, 16 April 2016

পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় হবে

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না 


বর্তমানে প্রতিদিন পূর্ব দিক থেকে সূর্য উদিত হচ্ছে। আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়ে পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় ঘটবে। এটি হবে কিয়ামতের অত্যন্ত নিকটবর্তী সময়ে। পশ্চিমাকাশে সূর্য উঠার পর তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কুরআন ও সহীহ হাদীছের মাধ্যমে এ বিষয়টি প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

)هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا أَنْ تَأْتِيَهُمْ الْمَلَائِكَةُ أَوْ يَأْتِيَ رَبُّكَ أَوْ يَأْتِيَ بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ يَوْمَ يَأْتِي بَعْضُ آيَاتِ رَبِّكَ لَا يَنفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا قُلْ انتَظِرُوا إِنَّا مُنتَظِرُونَ(

‘‘তারা শুধু এ বিষয়ের দিকে চেয়ে আছে যে, তাদের কাছে ফেরেশতা আগমণ করবে কিংবা আপনার পালনকর্তা আগমণ করবেন। অথবা আপনার পালনকর্তার কোন নিদর্শন আসবে। যে দিন আপনার পালনকর্তার কোন নিদর্শন এসে যাবে তখন এমন ব্যক্তির ঈমান কোন উপকারে আসবেনা যে পূর্ব থেকে ঈমান আনয়ন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোন সৎকাজ করেনি। হে নবী! আপনি বলুনঃ তোমরা অপেক্ষা করতে থাক। আমরাও অপেক্ষা করতে থাকলাম’’। (সূরা আনআমঃ ১৫৮)

অধিকাংশ মুফাস্সিরে কুরআনের মতে অত্র আয়াতে ‘‘কোন নিদর্শন’’ বলতে পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়কে বুঝানো হয়েছে। ইবনে জারীর আত্-তাবারী বলেনঃ আয়াতে বর্ণিত নিদর্শনটি পশ্চিমাকাশ থেকে সূর্য উদিত হওয়াই অধিক বিশুদ্ধ। কারণ এ ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[1]

১) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ يَعْنِي آمَنُوا أَجْمَعُونَ فَذَلِكَ حِينَ ( لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا )

‘‘যতদিন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবেনা ততদিন কিয়ামত হবেনা। যখন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং মানুষ তা দেখতে পাবে তখন সকলেই ঈমান আনবে। তখন এমন ব্যক্তির ঈমান কোন উপকারে আসবেনা যে পূর্ব থেকে বিশ্বাস স্থাপন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোন সৎকাজ করেনি’’।[2]

২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ

إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللَّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النَّهَارِ وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنَّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা দিনের বেলায় অপরাধকারীদের তাওবা কবূল করার জন্য সারা রাত স্বীয় হাত প্রসারিত করে রাখেন এবং রাতের বেলায় অপরাধকারীদের তাওবা কবূল করার জন্য সারা দিন তাঁর হাত প্রসারিত করে রাখেন। পশ্চিম আকাশ দিয়ে সূর্য উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এভাবে তাওবার দরজা খোলা থাকবে’’।[3]

পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার পর তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবেঃ

আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত পরম দয়াময় ও ক্ষমাশীল। বান্দা গুনাহ করে যখন তাঁর কাছে ক্ষমা চায় তখন তিনি খুশী হন এবং বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার পূর্ব পর্যন্ত তিনি বান্দার তাওবা কবূল করতে থাকবেন। কিন্তু যখন পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠে যাবে তখন কারো ঈমান গ্রহণযোগ্য হবেনা এবং ফাসেক ও গুনাহগারের তাওবাও কবূল হবেনা। কারণ পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হওয়া একটি বিরাট নিদর্শন যা সে সময়কার প্রতিটি জীবিত ব্যক্তিই দেখতে পাবে এবং প্রত্যেক কাফেরই কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। অথচ ইতিপূর্বে তারা অস্বীকার করতো। মরণ উপস্থিত হওয়ার পর পাপী মু’মিন ব্যক্তির মতই হবে তাদের অবস্থা। মরণ উপস্থিত হওয়ার পর গুনাহগার বান্দার তাওবা যেমন কবূল হয়না পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার পর তেমনি কাফেরের ঈমান ও গুনাহগারের তাওবা কবূল হবেনা। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ

)فَلَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا قَالُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَحْدَهُ وَكَفَرْنَا بِمَا كُنَّا بِهِ مُشْرِكِينَ (84) فَلَمْ يَكُ يَنْفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ فِي عِبَادِهِ وَخَسِرَ هُنَالِكَ الْكَافِرُونَ(

‘‘তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করলো তখন বললোঃ আমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করলাম এবং যাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করতাম তাদেরকে পরিহার করলাম। অতঃপর তাদের এ ঈমান কোন উপকারে আসলোনা যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করল। আল্লাহ তাআলার এ নীতি পূর্ব থেকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে। সেখানে কাফেরেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়’’। (সূরা গাফেরঃ ৮৪-৮৫)

ইমাম কুরতুবী পূর্ববর্তী যামানার আলেমদের থেকে বর্ণনা করে বলেনঃ পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠার পর ঈমান ও তাওবা কবূল না হওয়ার করণ এই যে, তখন অন্তরে ভয় ঢুকে যাবে, পাপ কাজ করার আশা-আকাঙ্খা মিটে যাবে এবং শরীরের শক্তি শেষ হয়ে যাবে। কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সময় সকল মানুষ মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে উপস্থিত ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাবে। তাই পশ্চিম আকাশে সূর্য দেখে কেউ তাওবা করলে তার তাওবা কবূল হবেনা। যেমন মালকুল মাওতকে দেখে তাওবা করলে কারো তাওবা কবূল হয়না। (তাফসীরে কুরতুবী, ৭/ ১৪৬)

ইমাম ইবনে কাছীর বলেনঃ ‘‘সে দিন যদি কোন কাফের ঈমান এনে মুসলমান হয়ে যায় তার ঈমান গ্রহণ করা হবেনা। সে দিনের পূর্বে যে ব্যক্তি মুমিন থাকবে সে যদি ঈমানদার হওয়ার সাথে সাথে সৎকর্ম পরায়ন হয়ে থাকে তাহলে সে মহান কল্যাণের উপর থাকবে। আর যদি সে গুনাহগার বান্দা হয়ে থাকে এবং পশ্চিম আকাশে সূর্য উঠতে দেখে তাওবা করে তার তাওবা কবূল হবেনা’’।[4]

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Menu :

Old post

অনেক অবিবাহিত ভাইয়েরা মনে করেন বিয়ে মানেই সুখ-শান্তি

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু এই ব্যাপারটা সঠিক নয়। আপনি বিবাহিত বা অবিবাহিতই হোন না কেন, আপনি সুখী হতে পারেন। আপনার লক্...

Followers

Slide show

Advertise Here

Popular Posts